চিনির সংকেত কি? চিনির রাসায়নিক ও গাঠনিক সংকেত কি?
চিনি মিষ্টি জাতীয় খাদ্য যা প্রধানত আখের রস হতে উৎপন্ন করা হয়, তবে বর্তমানে পরীক্ষাগারে উন্নতমানের চিনি উৎপন্ন করা হয়। চিনির ২টি সংকেত আছে, নিচে উভয় সংকেত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
রাসায়নিক সংকেত:
চিনির রাসায়নিক সংকেত C12H22O11 এবং রাসায়নিক নাম সুক্রোজ। পরীক্ষাগারে এক অণু গ্লুকোজ এবং এক অণু ফ্রুক্টোজকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে অণু সুক্রোজ বা চিনি উংপন্ন করা যায়। পরীক্ষাগারে তৈরিকৃত চিনি বিভিন্ন ঔষোধ তৈরিতে ব্যাবহৃত হয়। চিনির রাসায়নিক সংকেত থেকে বুঝা যায় চিনি মূলত কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের যৌগ, যেখানে কার্বনের ১২ টি পরমাণু, হাইড্রোজেনের ২২টি পরমাণু এবং অক্সিজেনের ১১টি পরমাণু রয়েছে।
চিনির গাঠনিক সংকেত:
নিচে চিনির গাঠনিক সংকেত দেয়া হয়েছে।
চিত্র: চিনির গাঠনিক সংকেত
চিনির অনুতে কার্বনের যোজনী ৪, হাইড্রোজেনের যোজনী ১ এবং অক্সিজেনের যোজনী ২।
চিনির উৎস:
বর্তমানে চিনি আখ এবং সুগার বীট থেকে তৈরি করা হয়। কারণ আখ এবং সুগার বীটের রসে প্রায় ১৬% চিনি থাকে। তবে বেশ কিছু ফল থেকে চিনি উৎপন্ন হয় তবে, এসব ফলের রসে চিনির পরিমাণ কম থাকায় আখ এবং সুগার বিটই চিনি উৎপাদনের সহজলভ্য উপায়।
- আখঃ বাংলাদেশসহ এশিয়া মহাদেশের প্রায় সবদেশেই আখ চাষ হয়ে থাকে। আখ বহুবর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, যার ফলন গ্রীষ্মপ্রধান দেশে সবচেয়ে ভালো হয়ে থাকে। একবার আখ রোপন করলে ২/৩ বছর তা থেকে ভালো ফলন পাওয়া যেতে পারে, এক্ষেত্রে প্রায় ১০ থেকে ১২ মাস সময় লাগে এবং লম্বায় ১০ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
- সুগার বীটঃ সুগার বীট উর্বর জমি এবং ঠান্ডা আবহাওয়া বিশিষ্ট দেশে ভালো জন্মে থাকে। এটি একটি রাইজোম জাতীয় উদ্ভিদ। প্রায় ৫ মাস সময় লাগে সুগার বীট বড় হতে এবং ওজন ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
চিনির প্রকারভেদ:
বাজারে ৩ ধরণের চিনি পাওয়া যায়।
- সাদা চিনি
- বাদামী চিনি
- তরল চিনি
সাদা এবং বাদামি চিনি স্ফটিকার দানা বিশিষ্ট হয়ে থাকে এবং তরল চিনি ১:১ অনুপাতে পানি মেশানো থাকে। এছাড়াও ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন ধরণের চিনি তৈরি হয় যা বিভিন্ন ফার্মেসি ও সুপারসপগুলোতে পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন ঔষধ ও অন্যান্য কাজে প্রয়োজন হয়।