ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা, পড়ালেখাসহ বিস্তারিত গাইডলাইন

ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব, ক্ষমতা, বেতনভাতা এবং সামাজিক পদমর্যাদা অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই অনেক শিক্ষার্থী ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন। তাই ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন পূরণে জানতে হবে কি করণীয়।

ম্যাজিস্ট্রেট বলতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের বুঝায়। এছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নামে আরো একটি পদ রয়েছে। উভয় পদের যোগ্যতা পড়ালেখাসহ বিস্তারিত এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেট/ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা

ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা এবং ধাপসমূহ নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: 
  • নূন্যতম যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ বছর মেয়াদি আইন বিষয়ক যেকোন বিষয়ে পাশ হতে হবে অথবা এল.এল.বি ডিগ্রীধারী হতে হবে।
  •  গ্রেড: নূন্যতম দ্বিতীয় শ্রেণীর স্নাতক ডিগ্রীধারী বা ৬০% মার্ক নিয়ে পাশ হতে হবে।
  • বিদেশ থেকে অর্জিত ডিগ্রীর ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে সমমান সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।
অন্যান্য যোগ্যতা:
  • ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার শারীরিক যোগ্যতা: শারীরিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই তবে শারীরিকভাবে ফিট হতে হবে। এমন কোনো শারীরিক অক্ষমতা থাকা যাবেনা যার কারণে উক্ত পদের দায়িত্ব পালনে পতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে।
  • বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে অথবা এই দেশের স্থায়ী বাসিন্দা বা Domiciled হতে হবে।
  • বাংলাদেশের নাগরিক নন এমন কেউ স্ত্রী/স্বামী হলে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
  • উচ্চতা: ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো উচ্চতার প্রয়োজন নেই।

ম্যাজিস্ট্রেট পদের নিয়োগ পক্রিয়া:

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের প্রবেশ পদ অর্থাৎ সহকারী জজ পদের নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যম সকলেই সহকারী জজ পদে নিয়োগ হয়ে থাকেন। পরবর্তীতে  আইন মন্ত্রণালয় সুপ্রীম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ এবং পদন্নতি দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করে থাকেন এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক চূড়ান্তভাবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
জুডিশিয়াল সার্ভিসের প্রবেশ পদের নিয়োগ পরীক্ষা তিনধাপে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
  • প্রথমত ১০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা হয়।
  • এরপর ১০০০ (এক হাজার) মার্কের লিখিত পরীক্ষা,
  • সর্বশেষ ১০০ মার্কের মোখিক পরীক্ষার মধ্যদিয়ে চুরান্তভাবে প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে থাকেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা

  • যে কোনো বিষয়ে আনার্স বা স্নাতক পাশ করতে হবে।
  • স্নাতক পরীক্ষায় নূন্যতম দ্বিতীয় শ্রেণী পেয়ে পাশ করতে হবে।
  • স্নাতক পাশ করার পর বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসনিক ক্যাডার পদে নির্বাচিত হতে হবে।
  • সরকার কর্তৃক অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদে বহাল হতে হবে। (বি.দ্র.: কোনো প্রশাশনিক ক্যাডারকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদে দায়িত্ব দিতে সরকার বাধ্য নয়, সরকার কেবলমাত্র প্রয়োজন মনে করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া যাবে অন্যথায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোওয়া যাবেনা। আর্থাৎ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শতভাগ নিশ্চিত নয়।)

ম্যাজিস্ট্রেট পদের বেতন

ম্যাজিস্ট্রেটের বেতন নির্ধারিত হয় জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বেতন স্কেল ২০১৬ অনুসারে। ম্যাজিস্ট্রেটগণের প্রাথমিক নিয়োগের সময় মূল বেতন হয়ে থাকে সর্বনিম্ন ৩০৯৩৫ টাকা এবং সবোর্চ্চ মূল বেতন ৬৪,৪৩০ টাকা।

পদন্নতি:

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে চাকরিরত অবস্থায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক সুপারিশ ক্রমে রাষ্ট্রপতি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে পদন্নতি দিয়ে থাকেন। এসময় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে তার মূল বেতন হবে ৭৮ হাজার টাকা।

ম্যাজিস্ট্রেট পদের উৎপত্তি:

২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদটি সৃষ্টি করা হয় বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের মাধ্যমে। এর ফলে জেলা প্রশাসকের সকল প্রকার বিচারিক ক্ষমতা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়া হয়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url