জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট এর মধ্যে পার্থক্য কি কি?

জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট এর মধ্যে পার্থক্য

জজ এবং ম্যাজিস্ট্রেট উভয়েই আইনপ্রয়োগকারী। তবে চাহিদা বা প্রয়োজন এবং কর্মপরিসরের ভিত্তিতে বেশ কিছু পার্থক্য দেখা যায়। যেকারণে অনেকেই জানতে চান মূলত কি ধরণের এবং কি কি পার্থক্য রয়েছে একজন জজ ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যে। নিম্নে এ বিষয়ে সুষ্পষ্ট তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট এর মধ্যে পার্থক্য

নিয়োগ এবং বিচার-কার্যের ভিত্তিতে জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট এর মধ্যে পার্থক্য:

  • জজ বিচার বিভাগে আইন প্রয়োগকারী এবং আদালতে বিচার কার্য পরিচালনা এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য নিযুক্ত হয়ে থাকেন। অন্যদিকে ম্যাজিস্ট্রেড একজন জুডিশিয়াল অফিসার, যাকে আইন প্রয়োগ করার জন্য নিযুক্ত করা হয়।
  • জজ হবার জন্য ২ বার Bar Council পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। অন্যদিকে ম্যাজিস্ট্রেড হবার জন্য ২ বার Bar Council পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না।
  • জুডিসিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে জজ এবং ম্যাজিস্ট্রেড উভয়েই নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও দুটি আলাদা পদ।
  • জজের মূল কাজ আদালতে বিচার কার্য পরিচালনা এবং বিচারের রায় প্রদান করা। অপরদিকে, ম্যাজিস্ট্রেটের মূল কাজ স্থানীয় পর্যায়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
  • জজ জটিল ও গুরুতর মামলার নিষ্পত্তি করে থাকেন। অপরদিকে ম্যাজিস্ট্রেট ছোটখাট মামলার নিষ্পত্তি করতে পারেন।
  • আইনগতভাবে একজন জজের ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেটের তুলনায় বেশি থাকে।
  • কোনো মামলায় সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবত জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষমতা জজের রয়েছে। অন্যদিকে কোনো ম্যাজিস্ট্রেড যাবত জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন না।
  • জজ সকল মামলার রায় বা সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেড নির্দিষ্ট পরিসীমার মধ্যে বিচারিক রায় দিতে পারেন।
  • ম্যাজিস্ট্রেডগণ দায়রা জজের অধীন হয়ে থাকেন।
  • কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বা রায়ের বিরুদ্ধে দায়রা জজের নিকট আপীল বা রিভিশনের আবেদন করা যায়।
  • কোনো মামলায় জজের রায় পরিবর্তন করার ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেটের থাকেনা। অন্যদিকে ম্যাজিস্ট্রেটের রায় পরিবর্তন হতে পারে জজের মাধ্যমে (আসামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে)

জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট এর মামলা ভিত্তিক পার্থক্য

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেডগণ সাধারণত নিম্নোক্ত মামলা নিয়ে কাজ করেন:
  • চুরি মামলা,
  • প্রতারণা মামলা,
  • ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা,
  • ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এর মামলা,
  • বন আইনের মামলা,
  • সাধারণ মারধরের মামলা,
  • রিয়েল এস্টেট আইনের অধীনে অপরাধমূলক মামলা,
  • প্রবাসী কল্যান আইনের মামলা ইত্যাদি।
অন্যদিকে দেওয়ানী জজ নিম্নোক্ত মামলাসমূহের বিচার কার্য পরিচালনা করে থাকেন:
  • জমা জমি সংক্রান্ত মামলা,
  • চুক্তি ভঙ্গের মামলা,
  • মানি স্যুট,
  • চাকরী সংক্রান্ত বিষয়,
  • বিবাহ-দেনমোহর-খোরপোষ-বাচ্চার হেফাজত ইত্যাদি বিষয়ক মামলা।
ফৌজদারী দায়রা জজ নিম্নোক্ত মামলার বিচার করে থাকেন:
  • হত্যা এবং হত্যা চেষ্টার মামলা,
  • ডাকাতি মামলা,
  • ছিনতাই মামলা,
  • অপহরণ মামলা,
  • চেক ডিজ অনার বা আর্থিক/দালিলিক চুক্তি মামলা,
  • অস্ত্র সংক্রান্ত মামলা,
  • নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ইত্যাদি পরিচালনা করে থাকেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
Advertisement