গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়? ও গর্ভবতী মায়ের ঘুমানোর নিয়ম

মেয়েদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত হল প্রেগনেন্সি (গর্ভবতী)। তাই এ সময়টাতে প্রত্যেক গর্ভবতী মাকে নিজের এবং অনাগত সন্তানের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত। গর্ভবতী মায়ের ঘুমানোর নিয়ম ও গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে কি হয় সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা থাকা দরকার। তা নাহলে গর্ভবতী মা এবং অনাগত সন্তান দুজনেই ঝুঁকির মূখে পড়তে পারে। আপনি যদি গর্ভবতী মা হয়ে থাকেন বা আপনার পরিবারের কেউ গর্ভবতী হয়ে থাকে তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। আশা করি, সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে উপকৃত হবেন।
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়?
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় তা নিচে তুলে ধরা হল:
- গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকার ফলে মায়ের পা ফুলে যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় পায়ে পানি নামার অন্যতম কারণ আতিরিক্ত শুয়ে থাকা।
- সন্তানের শরীরের পেশি মজবুত হওয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
- গর্ভবতী মায়ের পেট ও কোমরে ব্যথা হতে পারে।
- প্রসবকালীন সময় মা ও শিশু নানা ধরনের সমস্যায় পরতে পারেন।
- বাচ্চার সঠিক ভাবে নারাচারা করতে পারে না।
- ক্লান্তি ও শারীরিভাবে অবসাদ দেখা দিতে পারে।
- ডায়াবিটিস ও হাইপারটেনশনের মাত্রা বাড়তে পারে ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি কম হওয়ার কারণে।
- গর্ভাবস্থায় আতিরিক্ত শুয়ে থাকায় অভ্যস্থ হয়ে উঠলে নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। সর্বোত্তম হবে সময়মতো ও রুটিনমাফিক হাটা চলা ও ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা একজন গাইনী ডাক্তারের পরামর্শে।
বিশেষ নোট: গর্ভাবস্থায় পেট স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বড় হয়ে যায়, ফলে শারীরিক অস্বস্তির কারণে মায়েরা অনেক সময় ভালো ঘুমাতে পারেন না। আবার হরমোনের কারণে অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ার মত নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে, এমনকি প্রোজেস্টেরন লেভেল বেড়ে গিয়েও ক্লান্তি বাড়তে পারে। যেসব কারণে গর্ভাবস্থায় অনেক মাদেরই ঘুম বেড়ে যায়, যে কারণে দিনের বেলাতে অতিরিক্ত সময় ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। এমন সমস্যা এরিয়ে না গিয়ে, রাতে ভালো ঘুমের জন্য ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। তবে এজন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটির মধ্যমে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে, ফলে ঘুমও অনেক ভালো হবে। তাছাড়া ডায়াবিটিস ও হাইপারটেনশন হওয়ার প্রবণতাও অনেক কমে যাবে।
গর্ভবতী মায়ের ঘুমানোর নিয়ম:
গর্ভবতী মায়ের ঘুমানোর অনেক নিয়ম কানুন রয়েছে, যেমন ধরুন গর্ভাবস্থায় কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত? গর্ভাবস্থায় কোন পাশে ঘুমাবে? বা গর্ভাবস্থায় কিভাবে শোয়া উচিত নয়? নিচে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হল:
গর্ভাবস্থায় কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত?
গর্ভবতী মায়েদের রাতে ও দিনে পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। একজন গর্ভবতী মায়েকে অবশ্যই রাতে ৭-৮ ঘন্টা ও দিনে ১-২ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কোন পাশে ঘুমাবে?
গর্ভাবস্থায় বাম অথবা ডান উভয় পাশ হয়েই ঘুমানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী যে দিকে কাত হয়ে ঘুমাতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবেন সে দিক হয়েই ঘুমাতে পারেন। তবে বাম কাত হয়ে ঘুমাতে অনেক সময় পরামর্শ দেয়া হয় গর্ভবতীর কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে।
গর্ভাবস্থায় কিভাবে শোয়া উচিত নয়:
গর্ভাবস্থায় কোনোভাবেই চিৎ বা উপুড় হয়ে শোয়া উচিত নয়। এতে করে পেটের বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।