ব্রি ধান ৭৫ এর বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি
ব্রি ধান ৭৫ রোপা আমন মৌসুমের উচ্চফলনশীল একটি জাত। এর জীবনকাল ১১০-১১৫ দিন। অন্যান্য উফশী জাতের চেয়ে ব্রি ধান ৭৫ এ সারের মাত্রা ২০% কম প্রয়োজন হয়। গড় ফলন ৪.৫ টন (হেক্টর প্রতি)। তবে উপযুক্ত মাটি এবং সঠিক পরিচর্যা করা হলে ৫.৫ টন (প্রতি হেক্টরে) পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।
ব্রি ধান ৭৫ এর বৈশিষ্ট্য
- পূর্ণ বয়স্ক একটি ব্রি ধান ৭৫ এর গাছের গড় উচ্চতা ১০১ - ১১০ সে.মি.।
- ডিগ পাতা লম্বা, খাড়া ও প্রশস্ত এবং পাতার কালার গাঢ় সবুজ।
- গাছের কান্ড অনেক শক্ত তাই হেলে পড়ার সম্ভবনা নেই।
- শীষ থেকে একটি ধানের দানাও ঝরে পড়ে না, অনেক শক্ত।
- পাকার পর ধানের দানার কালার হয় সোনালী।
- ধানের আকার মাঝারি চিকন।
- চাল চিকন এবং ঝরঝরে ভাত হয়।
- সামান্য সুগন্ধি যুক্ত এই চাল রান্না করার সময় আরো অধিক সুগন্ধ ছড়ায়।
- পরিপুষ্ট ১ হাজার ধানের ওজন গড়ে প্রায় ২১ গ্রাম।
- এই ধান চাষ করার পরেও জমিতে সরিষা চাষ করার সুযোগ থাকে।
ব্রি ধান ৭৫ চাষ পদ্ধতি
- বীজতলায় বীজবপন: ৬ই শ্রাবণ - ৫ই ভাদ্র (২১ই জুলাই - ২০ই আগস্ট)।
- চারার বয়স: ২১ - ২৫ দিন।
- চারার সংখ্যা: ২-৩ টি করে প্রতি গুছিতে।
- রোপন দুরত্ব: ২০ × ১৫ সে.মি.।
- সার প্রয়োগ (প্রতি বিঘা): টিএসপি- ৭ কেজি, ইউরিয়া- ২০ কেজি,এমপি- ১১ কেজি, জিংক সালফেট- ১.৫ কেজি ও জিপসাম- ৮ কেজি।
- জমিতে চারা রোপন করার আগে সবটুকু টিএসপি, জিপসাম, এমপি এবং জিংক সালফেট একসাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
- চারা রোপন করার পর সমান তিন ভাগে ৩ কিস্তিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করবেন। যথা- রোপনের ৭ - ১০ দিন পর ১ম কিস্তি, রোপনের ২০ - ২৫ দিন পর ২য় কিস্তি এবং রোপনের ৩৫ - ৪০ দিন পর ৩য় কিস্তি।
- আগাছা দমন: চারা রোপনের পর কমকরে ২৫ - ৩০ দিন পর্যন্ত আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
- সেচ ব্যবস্থাপনা: ধানের চাল শক্ত না হওয়া পর্যন্ত যথেষ্ট পানি থাকতে হবে।
- পোকামাকড় বা রোগবালাই: রোগবালাই বা পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে বা রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দমন করতে হবে।
- ফসল পাকা: শীষের ৮০% ধান পেকে গেলে বুজতে হবে ধান পেকে গেছে তাই দেরি না করে ধান কাটা প্রয়োজন।
- ফসল কাটা: কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহ (২২ তারিখ) থেকে অগ্রহায়ন মাসের মাঝামাঝি (১৫ তারিখ) পর্যন্ত।