শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত (শেখ রাসেলের জীবনী)

শেখ রাসেল
চিত্র: শেখ রাসেল

শেখ রাসেল হলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কনিষ্ঠ ভাই এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্ব কনিষ্ঠ পুত্র। মাত্র ১০ বছর বয়সে ঘাতকেরা "শেখ রাসেলের জীবন কাহিনী" সমাপ্ত করে দেয় নির্মম হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। এই পোষ্টে "শেখ রাসেল এর জীবনী" সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।

শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত:

শেখ রাসেল ঢাকায় ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে ১৮ই অক্টোবর ১৯৬৪ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান নিজের প্রিয় লেখক "বার্ট্রান্ড রাসেলের" নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন "রাসেল" এবং মাতা বেগম ফজিলাতুন নেশা মুজিবো এই নামকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। রাসেলকে তার পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করতেন ও ভালোবাসতেন। রাসেল ৫ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। পিতা-মাতা ও ভাই-বোনকে ঘিরেই ছিল তার ভুবন।

শেখ রাসেলের শিক্ষা জীবন:

শেখ রাসেলের শিক্ষা জীবন শুরু হয় "ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে। ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সালে শত্রুর চক্রান্তে পরিবারের সদস্যদের সাথে তাকেও নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। তখন তিনি ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।

শেখ রাসেলের হত্যাকাণ্ড:

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভোরবেলা একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা-কর্মচারী ট্যাঙ্ক দিয়ে "শেখ মুজিবুর রহমানের" বাসভবন (ধানমণ্ডিস্থ ৩২ নম্বর বাড়ি) চারিদিক ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিবসহ তার পরিবারের সকল সদস্য ও ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও নির্মম ভাবে হত্যা করে ঘতকেরা। মুজিবের আদেশে ব্যক্তিগত কর্মচারীরা রাসেলকে নিয়ে পালানোর সময় ঘাতকেরা তাদের আটক করে নেয়। শিশু রাসেল আতঙ্কিত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতে লাগলো, "আমি আমার মায়ের কাছে যাব"। পরবর্তীতে যখন রাসেল মায়ের লাশ দেখতে পেল তখন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করে বলছিল "আমাকে আমার হাসু আপার (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দাও" (সে সময় "শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা" পড়াশুনোর জন্য পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন)।

ব্যক্তিগত কর্মচারী "এএফএম মহিতুল ইসলামের" ভাষ্যমতে,
যখন ঘতকেরা আমাদের আটক করে তখন দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরল রাসেল এবং বলল ভাইয়া ওরা আমাকে মারবে না তো? রাসেলের সেই কন্ঠস্বর শুনে আমার চোখে পানি চলে এলো। তখন এক ঘাতক এসে আমাকে তার রাইফেলের বাট দিয়ে মারতে শুরু করে, তা দেখে রাসেল আমাকে ছেড়ে দেয়। রাসেল খুব কান্নাকাটি করছিল আর বার বার করে বলছিল"'আমি মায়ের কাছে যাব"। সে সময় এক ঘাতক এসে রাসেলকে বলল, "চল তোর মায়ের কাছে দিয়ে আসি"। তার কথা বিশ্বাস করে রাসেল তার সাথে যায়। বিশ্বাস করতে পারিনি, এতো নির্মমভাবে ঘাতকরা ছোট্ট ফুটফুটে শিশুটাকেও হত্যা করতে পারে। রাসেলকে ভিতরে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করেন (১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ১০ বছর বয়স ছিল শেখ রাসেলের)।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url