বিলিরুবিন কেন বাড়ে? করণীয় কি? কমানোর উপায় কি?

বিলিরুবিন কেন বাড়ে?

যকৃতের প্রধান কাজ খাদ্য হজম করা। এটি দূষিত রক্তকে বর্জ্য পদার্থে রূপান্তর করতেও কাজ করে। কিন্তু এই কার্যকারিতা কোনো কারণে ব্যাহত হলে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায়।

বিলিরুবিন বেড়ে গেলে কি হয়?

রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জন্ডিস হয়। আমাদের লোহিত রক্তকণিকাগুলি সাধারণত বিলিরুবিন তৈরি করতে স্বাভাবিক নিয়মেই ভেঙে যায়, যা পরে যকৃতে প্রক্রিয়াজাত হয় এবং পিত্তের সাথে পিত্ত নালীর মাধ্যমে পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে। এবং বিলিরুবিন অন্ত্র থেকে মলের মাধ্যমে শরীর থেকে নির্গত হয়।

লিভার শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই অঙ্গটি শরীরে শক্তি উৎপাদনের জন্য দায়ী। এছাড়া লিভারও শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। এমনকি লিভার মৃত কোষ অপসারণের জন্যও কাজ করে। যদি এই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন না হয়, তবে এই ক্ষতিকারক পদার্থ লিভারে বিলিরুবিন হিসাবে জমে। এর ফলে জন্ডিস হয়।

বিলিরুবিন বেড়ে গেলে করণীয়

মূলত, বিলিরুবিন বেড়ে গেলে জন্ডিস হয়। কিন্তু জন্ডিস কোনো রোগ নয় তাই এর কোনো চিকিৎসাও নেই। তবে বিলিরুবিন অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে নানাবিধ সমস্যা হয়, তাই নিম্নোক্ত নিয়ম মেনে চললে উপকৃত হওয়া যাবে।

  • ৭ - ২৮ দিনের মধ্যে বিলিরুবিনের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে ভয়ের কোন কারণ নেই, বিলিরুবিনের মাত্রা এমনিতেই ঠিক হয়ে যায় অধিকাংশ সময়।
  • এই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে বিলিরুবিনের মাত্রা অনেক কমে যায়।
  • এই সময়ে ব্যথার ওষুধ যেমন: অ্যাসপিরিন, প্যারাসিটামল, ঘুমের ওষুধসহ অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।
  • কোনো প্রকার ওষুধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

বিলিরুবিন কমানোর উপায়

বিলিরুবিন কমানোর কার্যকরী উপায়সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো:
  • পানি পান করুন - এই সময়ে লিভারের যত্ন নিতে চাইলে বেশি করে পানি পান করতে হবে। প্রচুর পানি পান করা শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।
  • কফি বা গ্রিন টি - ২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ৩ কাপ কফি বা গ্রিন টি পান করলে লিভারের সমস্যা কমে যায়, পাশাপাশি বিলিরুবিনের মাত্রা কমে যায়।
  • বিশ্রাম - এই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে।
  • আখের রস - আখের রস দ্রুত বিলিরুবিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, তাই নিয়ম করে আখের রস বা আখের গুড়ের শর্বত পান করতে পারেন। আখের রসের পাশাপাশি লেবু ও কমলা জাতীয় ফলের রস এই সমস্যায় দারুণ কাজ করে।
  • ত্রিফলা চূর্ণ - এক চা চামচ ত্রিফলা চূর্ণ এক গ্লাস পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই জল সেবন করুন। এতে বিলিরুবিনের মাত্রা কমে আসতে সহায়ক হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ বা কবিরাজি টোটকা গ্রহণ করা উচিত নয়।

আরো পড়ুন .......

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url