জন্মাষ্টমী পূজা পদ্ধতি

জন্মাষ্টমী পূজা পদ্ধতি
চিত্র: জন্মাষ্টমী পূজা

শ্রী কৃষ্ণনের জন্মাষ্টমী পূজা বাংলার হিন্দু সমাজের বিষেশ ব্রত গুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিটি হিন্দু পরিবার এই ব্রত পালন করতে পারবেন। হিন্দুদের অনেকেই, বিশেষ করে বৈষ্ণব মতাবলম্বীরা জাগতিক মঙ্গলকামনায় এবং অশুভ-অকল্যাণ দূর করতে এই ব্রত পালন করে থাকে।

জন্মাষ্টমী ব্রত পালনের নিয়ম:

জন্মাষ্টমীর আগের দিন নিরামিষ খাবার খেয়ে সংযম পালন করতে হবে এবং রাত ১২টার আগে খাবার খেয়ে নিতে হবে। ঘুমনোর আগে অবশ্যই ভাল করে মুখ ধুয়ে ঘুমাতে হবে। জন্মাষ্টমীর দিন সকাল থেকে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত উপবাস এবং জাগরণ থাকতে হবে। উপবাস থেকে হরিনাম জপ, কৃষ্ণ লীলা শ্রবণ, ভগবানকে দর্শন, ভক্ত সঙ্গে হরিনাম কীর্তন, অভিষেক দর্শন করতে হবে এবং ভগবানকে অভিষেক করে একাদশী দিনের মতোই প্রসাদ সেবন করতে পারবেন।

জন্মাষ্টমী পূজা পদ্ধতি:

জন্মাষ্টমী পূজা পালনের জন্য উপকরণ হিসেবে ফুল, আতপ চাল, ফলের নৈবেদ্য, তুলসীপাতা, দূর্বা, ধূপ, দীপ, পঞ্চগব্য, পঞ্চগুড়ি, পাট, বালি, পঞ্চবর্ণের গুড়ো, মধু পর্কের বাটি, আসন-অঙ্গুরী সংগ্রহ করবেন। তার পরে স্নান করে প্ররিষ্কার পোষাক পরিধান করে নিজেকে পূজার জন্য প্রস্তুত করবেন। জন্মাষ্টমী দিন উপবাসে থেকে এই সব উপকরণ দিয়ে একটি শান্ত ও কোলাহল মুক্ত স্থানে (স্থানটি অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন) শ্রীকৃষ্ণের পূজা করবেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি ছবি অথবা মূর্তির সঙ্গে শ্রী গণেশের মূর্তিও স্থাপন করা হয়ে থাকে। পাশে প্রদীপ, ধুপ, আগরবাতি জ্বালিয়ে রাখবেন এবং মিষ্টি, ফল ও অন্যান্য প্রসাধ সামগ্রী থালায় সাজিয়ে রাখবেন। মনে রাখবেন, গোপালের প্রিয় খাবারগুলি সম্ভব হলে গোপালের ভোগ হিসেবে নিবেদন করতে পারেন যেমন: মাখন মিছরি, ননী, নাড়ু, তালের বড়া, ক্ষীর, রাবরি, মালাই, মালপোয়া ইত্যাদি।

এরপর, প্রথমে শ্রী গণেশের প্রার্থনা (ওম শ্রী গণেশায় নমহা) বলে কিছুক্ষণ ধ্যান করবেন, ধ্যান করার সময় আপনার মনকে শান্ত রাখবেন। তারপর, শ্রীকৃষ্ণের প্রার্থনা (ওম নমঃ ভাগবতে বাসুদেবায়) হাত জোর করে (ফুল,তুলসি পাতা হাতের মধ্যে রাখবেন) তিন বার বলবেন। প্রার্থনা শেষে হাতের ফুল শ্রীকৃষ্ণের পায়ে অর্পন করবেন (সাথে উলু ধ্বনি দিবেন)। শেষে, দুধ, ডাবের জল, গঙ্গা জল, কয়েকটা তিল, দুর্বা ও তুলসি পাতা একটি পিতালের ঘটে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের অভিষেক করবেন।

জন্মাষ্টমীর ব্রত পালনের ফল:

এই ব্রত পালন করলে শতজন্মের মহাপাতক থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়। কেউ যদি এক বার শ্রীকৃষ্ণের এই জন্মাষ্টমী উপবাস সঠিক ভাবে পালন করতে পারে, তাহলে তাকে আর এই জড়-জগতে জন্মগ্রহন, মৃত্যুবরণ, জরা-ব্যাধি, দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে হয় না এবং পুনর্জন্ম গ্রহণ করতে হয় না।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url