ইসলামিক স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

ইসলামিক স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প

ইসলামিক স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প:

আল্লার এক বান্দি - সুচরিত্রবান নারী, বিবাহের পর স্বামীর ঘরে আসেন। দীর্ঘদিন স্বামীর ঘর করার পর একদিন স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রিয় স্বামী আমার, "তুমি আমাকে কি পরিমাণ মহব্বত করো?"

স্বামী উত্তর দিলেন, "স্ত্রী, কিভাবে বুঝাবো আমি তোমাকে কি পরিমাণ মহব্বত করি? এক কথায় জানিয়ে দিতে চাই, তুমি আমার জীবণের সব।"

তখন স্ত্রী ডেকে বলেন, প্রিয় স্বামী আমার, আমি যদি আপনার প্রিয় হই, তাহলে কি তুমি আমার মনের আশা পূরণ করবে?।"

স্বামী উত্তর দিল, "হুম, অবশ্যই আমি তোমার ইচ্ছা পূরণ করবো, বলো তুমি কি চাও, তুমি যা চাইবে, তার চেয়ে আরো বেশি পূরণ করবো। বলো তুমি কি চাও?"

তখন স্ত্রী বলল, "আপনি যদি সত্যিই আমার মনের আশা পূরণ করতে চান, তাহলে দেরি না করে আমাকে এখনি তালাক দাও, আমি তালাক চাই, তুমি আমাকে তালাক দাও।"

স্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনে স্বামী হতবাক হয়ে গেলেন, মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। যাকে এতো ভালোবাসেন, সে তার নিকট তালাক চাচ্ছেন, বিচ্ছিন্ন হতে চাচ্ছেন। হতাশ মনে বারবার স্বামী বলতে লাগলেন, "না, না, স্ত্রী আমি তোমাকে তালাক দিতে পারবোনা। এটা তুমি কি বললে। এটা কি সম্ভব?"

স্ত্রী বললো, "তুমি ওয়াদা করেছো, বলেছো আমার মনের আশা পূরণ করবে, তাই দেরি না করে আমার ইচ্ছা পূরণ করে দাও"

স্বামী বলে, " এটা কোনোভাবেই সম্ভব না।"

স্ত্রী বলে, "ওয়াদার খেলাপ করতে পারোনা। যেহেতু বলেছো, আমি চাইলেই দিবা, তাই আর দেরি করোনা, তালাক দাও।"

স্বামী বলে, "না পারবোনা।"

কিন্তু স্ত্র্রীও ছেড়ে দেবার পাত্রী নন, তিনি বললেন, "তুমি কথা দিয়েছো, ওয়াদা করেছো - আমি যা চাইবো তাই দিবে। এখন তোমার ওয়াদা রাখো, ওয়াদা ভঙ্গ করবেনা। আমি তালাক চাই, আমাকে তালাক দিয়ে দাও।"

কিন্তু স্বামী কোনোভাবেই রাজি হয়না, শেষ পর্যন্ত দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নেয়, সমস্যার সমাধাণের জন্য পয়গম্বরের দরবারে জাবেন এ বিষয়ে ফয়সালা করতে।

এরপর স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে রওনা হন। পথে চলতে চলতে, হঠাৎ স্বামী রাস্তায় আছার খেয়ে পড়ে যান। পড়ে তার পা ভেঙে যায়। চিৎকার করে বলতে থাকেন, "বাঁচাও, বাঁচাও।"

অনেক আঘাত পেয়েছেন, শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে। তখন আল্লার বান্দি ডেকে বলে, "চলো বাড়িতে চলো। দরবারে যাওয়ার দরকার নাই। তালাক লাগবেনা। চলো বাড়ি চলো।"

বাড়িতে যাওয়ার পর স্ত্রী স্বামীকে বলে, " আমাকে তুমি মাফ করে দাও। আমি যে ইচ্ছা পোষণ করেছি, যেটা চেয়েছি তা ফিরিয়ে নিলাম।"

তখন স্বামী জানতে চায়, "ও প্রাণের স্ত্রী কেন তুমি আমার কাছে তালাক চেয়েছিলে, সেটা জানতে চাই।"

স্ত্রী বলে, "আল্লাহর নবি বলেছেন, " আল্লাহ যদি কারো ভালো চান, তবে তাকে নসিবতের দ্বারা পরীক্ষা নিবেন।" আমি তোমার ঘরে অনেকদিন হলো আছি, আজ পর্যন্ত কোনো মসিবতে পরিনাই, তোমার থেকেও কোনো কষ্ট পাইনাই। তাই বুঝতে পারলাম তোমার ঘরে কোনো মসিবত নাই, আর যার ঘরে কোনো মসিবত নাই, তার ঘরে কোনো রহমতো নাই। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে ঘরে আল্লাহর রহমত নাই, সে ঘরে আমি আল্লার বান্দি থাকবোনা। এরপর যখন আমরা নবিজীর দরবারে রওনা হলাম, তখন তোমার উপর মসিবত এলো, বুঝলাম আল্লাহ তোমার উপর রহমতের নজর দিয়েছে। তাই আমি আবার ফিরে আসলাম। আমার তালাক চাইনা, যে ঘরে আল্লাহর রহমত আছে সে ঘরে আমি আছি। 

উপরের গল্পটি সত্য কাহীনি এবং শিক্ষামূলক ইসলামিক স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প। উক্ত গল্পটির আলোকে মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকীর সুমধুন কন্ঠের ওয়াজ শুনুন এবং চাইলে ডাউলোড করুন নিচ থেকে।




(Download) 7.7 MB

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url