তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প কি? কোথায়? কাদের জন্য?
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প কি?
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প: করোনা মহামারির সময় স্কুল, কলেজ বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। এসময় অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস নেয়া হতো। কিন্তু দরিদ্র এবং মধ্যবিত্য পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারতোনা, কারণ তাদের কোনো স্মার্ট ফোন বা ট্যাবলেট ছিলনা। আবার নতুন স্মার্ট ফোন কেনার মতো সামর্থ না থাকায় তারা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতোনা। এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের স্মার্ট ফোন/ ট্যাবলেট কেনার ব্যাবস্থা করার জন্য "ট্যাবলেট স্কিম ২০২১" নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন, যার বর্তমান নাম "তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প"।
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প ২০২৩:
২০২১ এবং ২০২২ সালের মতো ২০২৩ সালেও প্রকল্পটি চালু রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বীকৃত যে কোনো স্কুল/ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ০,০০০ টাকা করে দেওয়া হয় ১টি মোবাইল ফোন / ট্যাব কেনার জন্য। এজন্য শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট নিয়মে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পরে তথ্য যাচাই বাছাই করে সঠিক ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত অর্থ সরাসরি শিক্ষার্ধীর নিজস্ব ব্যাংক এক্যাউন্টে প্রদান করা হয়, ফলে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়না। নিচে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আবেদন প্রক্রিয়া:
আবেদনকারীকে প্রথমে Student DCF ফর্ম পুরণ করতে হবে। Student DCF ফর্মটি স্কুল থেকে স্রংগহ করতে হবে। ফর্মে শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় সকল তথ্য জানাতে হবে। যেমন:
- নাম
- বয়স
- রক্তের গ্রুপ
- স্কুলের নাম
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমান
- বাবার নাম
- অভিভাবকদের নাম ও ঠিকানা
- ঠিকানা প্রমাণ
- আধার কার্ডের নম্বর
- ১কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ব্যাংকের তথ্য
নোট: সকল তথ্য সঠিক ভাবে পুরণ করে ফর্মটি নিজ নিজ স্কুলে জমা করতে হবে। শিক্ষকরা ফর্মে থাকা আবেদনকারীর সমস্ত তথ্য অনলাইনে আপলোড করবেন, তারপরে বাছাই পর্ব শুরু হবে। যাদের তথ্য ভুল বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে, এবং বাকিদের জন্য নির্দিষ্ট টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।
প্রকল্পটি কবে চালু হয়?
২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রথম তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প চালু করার ঘোষণা দেন। এরপর নবান্নে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তখন প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছিল, "ট্যাবলেট স্কিম ২০২১"। পরবর্তীতে ২০২১-২০২২ সালের বাজেট পেশ করার সময় নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয় ‘তরুণের স্বপ্ন’।
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প টাকা কবে দেবে?
শিক্ষার্থীদের দেয়া সকল তথ্য যাচাই বাছাই এবং অফিশিয়াল কার্যক্রম শেষ হবার সাথে সাথেই প্রকল্পের টাকা দেবে। এক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী যদি সঠিকভাবে তথ্য দিয়ে থাকেন তাহলে ব্যাংক এক্যাউন্টে টাকা চলে আসবে। কিন্তু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ সঠিক না থাকলে কিংবা অ্যাকাউন্টটি সক্রিয় না থাকলে টাকা আসবেনা। এমতাবস্থায় অনেক শিক্ষার্থীর টাকা পেতে দেরি হয়। প্রযুক্তি বোর্ডের অধীনে থাকা অনেক শিক্ষার্থী বিগত বছর টাকা পেতে সমস্যায় পড়েছেন। আর এই ভূলের অভিযোগ উঠেছিল বিকাশ ভবনের উপর। যে কারণে এবার সমস্ত দায়িত্ব স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ওপর দেয়া হয়েছে। তাদেরকে আগে থেকেই বলা হয়েছে যেন তারা সমস্ত তথ্যগুলি আপডেট করে রাখেন।
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে কারা আবেদন করতে পারবেন:
- আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে।
- অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারের শিক্ষার্থীরা হতে হবে।
- বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার নিচে থাকতে হবে।
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বীকৃত যে কোনও স্কুলে অধ্যয়নরত দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী হতে হবে।