বিদ্যালয় কি? কাকে বলে? বিস্তারিত আলোচনা এবং বিদ্যালয় রচনা
বিদ্যালয় কি / স্কুল কি?
বিদ্যালয় "বিদ্যা" (জ্ঞান) এবং "আলয়" (আধার বা স্থান) শব্দের সহযোগে গঠিত, যা জ্ঞান প্রদান এবং গ্রহণের স্থান বা জ্ঞানের আধার হিসাবে পরিচিত।
বিদ্যালয় কাকে বলে?
বিদ্যালয় হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষাদানের কেন্দ্র, যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে জ্ঞানলাভ করে। বিদ্যালয় দালানকোঠার হতে হবে এমনটা নয়, বরং একজন শিক্ষক কিছু শিক্ষার্থী, এবং শিক্ষাসহায়ক পরিবেশই হল বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়গুলি একটি নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমের অধীনে পরিচালিত হয়। স্কুল সাধারণত প্রথম শ্রেণীতে শুরু হয়, কিন্তু প্লে-গ্রুপ, নার্সারি, কেজি, প্রাক- বিদ্যালয় বা প্রিস্কুল ইত্যাদি বিদ্যালয় হিসেবে গৃহীত হয় এবং এই শিক্ষাগুলোও স্কুলের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। সাধারন অর্থে, স্কুল বলতে সমস্ত শিক্ষার পরিবেশকে বোঝায়, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় হল স্কুলের সাধারন নাম। কিন্তু স্কুলকে সাধারণত প্রাক-বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম বা দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়:
প্রাথমিক বিদ্যালয় (এলিমেন্টারি স্কুল নামেও পরিচিত) হল একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে ৫ বছর - ১২ বছর বয়সের শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করে থাকে। এখানে শিশুরা প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি প্রযার্ন্ত শিক্ষা গ্রহণ করে, তবে কিছু সংখক প্রাথমিক শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা মিলে ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের মিডল স্কুল ও রয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়:
বাংলাদেশে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা = ৬৫,০৯৯ টি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় = ৩৭,৬৭২টি
নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় = ১,২০৭টি
নতুন জাতীয়রনকূত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় = ২৬,১৫৯টি
পরীক্ষন বিদ্যালয় = ৬১টি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর:
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হল:
স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে বংলাদেশের প্রায় ৩৭,০০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করন করেন। এরি পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের পরে সৃষ্ট প্রায় ২৬,০০০ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। বাংলাদেশের সরকার শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষা খাতে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে প্রায় ৫৮,০০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচি-৩ (পিইডিপি-৩)-এর মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের সকল শিশুকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে এবং নতুন বই বছরের প্রথম দিনই সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টি করে প্রাক-প্রাথমিক (প্লে-গ্রুপ) শ্রেণি চালু করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির উপযুক্ত ১০০% শিশুর ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থী বৃদ্ধির কারনে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মান ও সম্প্রসারন করা হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদমর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকদের ৩য় শ্রেণী থেকে ২য় শ্রেণীতে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে দেশের সকল ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী একসাথে এবং একই প্রশ্নে জাতীয় পরীক্ষার ন্যায় (সমাপনী পরীক্ষায়) অংশগ্রহণ করছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রচলন ২০০৯ সাল থেকে শুরু হয়েছে, ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। এই সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেহ গঠনসহ বিভিন্ন খেলা-ধুলায় আগ্রহী করে তোলার জন্য প্রতিবছরই "বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট" এবং "বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের" আয়োজন করা হচ্ছে।
শিক্ষাজীবনের প্রথম দিন থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সরবরাহ করা হচ্ছে। আশা করা যায় আমাদের শিশুরা আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রতিযোগিতা মূলক বিশ্বে নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় মাঠপর্যায়ে শিক্ষকদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য ৬৭ টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ৫০৫ টি উপজেলা / থানা শিক্ষা অফিস এবং স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য ৪৮২ টি উপজেলা / থানা রিসোর্স সেন্টার রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম সহজে সম্পাদন করার জন্য মাঠপর্যায়ে "ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরন" করা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় ই ব্যবস্থাপনা:
ই-প্রাইমারী স্কুল সিস্টেম গুলো হল-
ড্যাশবোর্ড:
- ই-প্রাইমারী স্কুল সিস্টেম ড্যাশবোর্ড
- ই-মনিটরিং ড্যাশবোর্ড
ব্যবহার নির্দেশিকা:
- ই-প্রাইমারী স্কুল সিস্টেমের ডাটা ভেলিডেশন ম্যানুয়াল
- অনলাইনে ভৌত অবকাঠামো ও শিক্ষক তথ্য প্রদানের ব্যবহার নির্দেশিকা
- অনলাইনে ছাত্র/ছাত্রীর তথ্য প্রদানের ব্যবহার নির্দেশিকা
- ই-প্রাইমারী ড্যাশবোর্ড ব্যবহার নির্দেশিকা
- অনলাইন ট্রেনিং ট্রাকিং সফটওয়্যার ব্যবহার নির্দেশিকা
- ই-প্রাইমারী সিস্টেমে শিক্ষক বদলি/অবসর/পিআরএল ম্যানুয়াল
- ই-মনিটরিং সিস্টেমের কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর
- ই-মনিটরিং সিস্টেম ম্যানুয়াল
আমাদের বিদ্যালয় রচনা
ভূমিকা:
বিদ্যালয় আমাদের সকলের কাছে পরম ভালোবাসার জায়গা। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন আমাদের বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। এক সাথে পড়াশোনা, খেলাধুলা করি সবকিছু নিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময়ই আমরা বিদ্যালয়ে কাটাই। আমাদের শিক্ষকেরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে আমাদের সাহায্য করেন।
আমার বিদ্যালয়:
আমার বিদ্যালয়ের নাম রামানন্দের আঁক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া থানার রাজিহার ইউনিয়নে রামানন্দের আঁক গ্রামে অবস্থিত। আমাদের বিদ্যালয়ের বিশাল বড় একটি মাঠ রয়েছে, তার শাথে একটি মাধ্যনিক বিদ্যালয় ও একটি সাইক্লোন সেন্টার রয়েছে। পাশ দিয়ে সারি সারি গাছে ঘেরা মাঝখানের মাঠটি নরম ঘাসে পরিপূর্ণ এবং তারই মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি মস্ত বড় শহীদমিনার।
আমাদের ক্লাসরুম গুলো মস্ত বড় বড়, এক একটি ক্লাসে প্রায় ৫০-৬০ জন করে আমরা একসাথে ক্লাস করি, এবং দুপাশে রয়েছে বড় বড় জানালা।
ছাত্র-শিক্ষক সংখ্যা:
আমাদের বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ মোট ৮জন শিক্ষক-শিক্ষীকা আছেন। মোট ছাত্র সংখ্যা ৪০০ জন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সবাই উচ্চ শিক্ষিত, সৎ ও পরিশ্রমী। আমাদের প্রধান শিক্ষক একই সঙ্গে সুযোগ্য শিক্ষক ও দক্ষ পরিচালক। তার সুযোগ্য পরিচালনায় বিদ্যালয়ের সুনাম বেড়েই চলেছে।
সহপাঠ কার্যক্রম:
আমাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি আদব-কায়দা, আচার-ব্যবহার, চরিত্র গঠন ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ খুবই যত্নবান। আমরাও তাদেরকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা ও ভক্তি করি। এছাড়া, এখানে কবিতা আবৃত্তি, নাচ, গান ও বিতর্কপ্রতিযোগাতা মূলক চর্চাও হয়। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। এবং আমাদের বিদ্যালয়ের ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক।
উপসংহার:
আমাদের স্কুলটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। খেলাধুলাসহ সর্ব বিষয়ে আমাদের স্কুল একটি আদর্শ স্কুল। আমরা আমাদের স্কুলের কল্যাণ ও উন্নতি কামনা করি।