নার্সিং ভর্তির নীতিমালা, যোগ্যতা এবং শর্তসমূহ বিস্তারিত পড়ুন।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তি নীতিমালা
বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল আইন অনুযায়ী ভর্তি নীতিমালা- ২০২১ অনুযায়ী, বাংলাদেশের সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি পর্যায়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজ বা ইনস্টিটিউটে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রযােজ্য হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমােদিত এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত (ক) ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন নার্সিং (খ) ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি এবং (গ) ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে কার্যকর হবে।- নার্সিং পড়ার যোগ্যতা ২০২৩
- নার্সিং ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম:
- নার্সিং ভর্তি পরীক্ষার কোটাভিত্তিক মেরিট লিস্ট
- নার্সিং এ ভর্তি হতে কি কি লাগে?
- নার্সিং কোর্সে ভর্তির আসন সংখ্যা
নার্সিং পড়ার যোগ্যতা ২০২৩
সরকারি নার্সিং ভর্তি যোগ্যতা
- প্রার্থীকে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
- বিএসসি ইন নার্সিং এবং ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে যথাক্রমে মেয়ে কোটা ৮০% এবং ছেলে কোটা ২০% হারে ভর্তির আসন সংরক্ষিত থাকবে। ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে কেবল ছাত্রীরাই ভর্তির যােগ্য হবে, ছেলেরা ভর্তি হতে পারবেননা।
- ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত প্রার্থীরা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ভর্তিযােগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
- প্রার্থীকে যে শিক্ষাবর্ষের জন্য নার্সিং/মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে সেই ইংরেজী সাল এবং তার পূর্বুর ইংরেজী সালে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ এবং ধারাবাহিকভাবে এর অব্যবহিত পূর্ববর্তী দুই ইংরেজী সালের মধ্যে এসএসসি পাশ হতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার জিপিএ নির্ধারণঃ
- বিএসসি ইন নার্সিং: বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের দুই পরীক্ষায় মােট জিপিএ ৭.০০ থাকতে হবে, তবে কোনাে পরীক্ষায় জিপিএ ৩.০০ এর কম পেয়ে থাকলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেননা এবং উভয় পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে জিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে।
- ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি: যে কোনাে বিভাগ হতে (যেমন মানবিক শাখা. ব্যাবসা শাখা ইত্যাদি) এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান দুটি পরীক্ষায় মােট জিপিএ ৬.০০ থাকতে হবে। তবে কোনাে একটি পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ এর কম থাকা যাবেনা।
- বিএসসি নার্সিং এর ক্ষেত্রে “এ” লেভেলে Biology বাধ্যতামূলক। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গ্রেড প্রাপ্ত পাঁচটি বিষয়ে গড় জিপিএ এর সাথে অতিরিক্ত অন্যান্য বিষয়ের গড় জিপিএ থেকে দুই বাদ দিয়ে অতিরিক্ত বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর যােগ হবে এবং উভয় পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের উপর সিজিপিএ নির্ধারণ হবে। এক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে বিএসসি সমমান সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে।
বেসরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির যোগ্যতা
বেসরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তির জন্য উপরের সকল সর্ত প্রযোজ্য হবে। নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় নূন্যতম ৪০ নম্বর পেতে হবে। কোনো পরীক্ষার্থী ৪০ এর কম পেলে বেসরকারি কলেজেও ভর্তি হতে পারবেননা।
ছেলেদের নার্সিং পড়ার যোগ্যতা
ছেলেরা বি.এস.সি নার্সিং এবং ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স এন্ড মিডওয়াইফেরি কোর্সে ২০% কোটায় ভর্তি হতে পারবেন। তবে ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফেরি কোর্সে ছেলেরা ভর্তি হতে পারবেননা। ভর্তির ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে উপরের সকল শর্ত বা যোগ্যতা থাকতে হবে।
মানবিক বিভাগ (আর্টস) থেকে কি নার্সিং পড়া যায়
মানবিক বিভাগসহ যে কোনো বিভাগ থেকে ডিপ্লোমা নার্সিং এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফেরি কোর্সে পড়া য়ায়। তবে বি.এস.সি নার্সিং এর জন্য বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ হতে হবে।
নার্সিং ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম:
- এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৪ গুণিতক হিসাবে ২০ নম্বর; এইচএসসি পরীক্ষার ৬ গুণিতক হিসাবে ৩০ নম্বর মোট ৫০ নম্বর এবং ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফল থেকে জাতীয় মেধা অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।
- ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সে প্রার্থী নির্বাচনের জন্য একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে । তবে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন আলাদা হবে।
- বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের জন্য এমসিকিউ পদ্ধতিতে বাংলা-২০, ইংরেজী-২০, গণিত-১০, বিজ্ঞান-৩০ (জীববিজ্ঞান, পদার্থ ও রসায়ন) এবং সাধারণ জ্ঞান-২০ নম্বরের অর্থাৎ মোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। পাশ নম্বর ৪০ (চল্লিশ) নির্ধারিত থাকবে।
- ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি এবং ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য এমসিকিউ পদ্ধতিতে বাংলা-২০, ইংরেজী-২০, গণিত-১০, সাধারণ বিজ্ঞান-২৫ এবং সাধারণ জ্ঞান-২৫ নম্বরের অর্থাৎ মোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। পাশ নম্বর ৪০ (চল্লিশ) নির্ধারিত থাকবে।
- অকৃতকার্য (অনুত্তীর্ণ) প্রার্থীগণ কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না।
- ভর্তি পরীক্ষার আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণ, নিরীক্ষণ এবং ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল চূড়ান্তকরণ কম্পিউটারের (সফট্ওয়ারের) মাধ্যমে করা হবে।
নার্সিং ভর্তি পরীক্ষার কোটাভিত্তিক মেরিট লিস্ট:
- মুক্তিযােদ্ধার সন্তান এবং সন্তানের সন্তানদের জন্য মােট আসনের ২% সংরক্ষিত থাকবে। অবশিষ্ট ৯৮% আসনের মধ্যে ৬০% প্রার্থী জাতীয় মেধা থেকে এবং ৪০% প্রার্থী জেলা কোটায় নির্বাচন করা হবে। সংরক্ষিত কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে অপেক্ষমান তালিকার প্রার্থী দিয়ে শূন্য আসনসমূহ পূরন করা হবে। নিজ জেলা প্রমাণ হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন এবং ইউনিয়ন/পৌরসভা/সিটি করপােরেশনের নাগরিকত্ব সনদ সংযুক্ত করতে হবে।
- অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেধা তালিকা অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্নের পর অবশিষ্ট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা তাদের স্ব স্ব পছন্দ অনুযায়ী যেকোনাে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে।
- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫% আসন মেধাবী-অসচ্ছল ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এই আসনের ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বেতন-ভাতাদি ও সেশন চার্জের অতিরিক্ত কোনো প্রকার ফি গ্রহণ করতে পারবে না।
নার্সিং এ ভর্তি হতে কি কি লাগে?
আপনি যদি ভর্তি পরীক্ষায় মেরিট রেসাল্টে সরকারি নার্সিং কলেজে চান্স পান তাহলে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস লাগবে ভর্তি হবার সময়।- এসএসসি ও এইচএসসির মূল সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট
- এসএসসি ও এইচএসসির সার্টিফিকেট এবং মার্কশিটেট চার কপি করে সত্যায়িত কপি
- ৬ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সত্যায়িত)
- ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র
- জন্মসনদ বা এনআইডি কার্ডের চারটি সত্যায়িত কপি
- মূল নাগরিক সনদপত্র
- অভিভাবকের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ
নার্সিং কোর্সে ভর্তির আসন সংখ্যা
- বি.এসসি নার্সিং কোর্সের জন্য মোট ১২ টি সরকারি কলেজে ১২০০ টি আসন রয়েছে।
- ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য ৪৬ টি সরকারি নার্সিং কলেজে মোট আসন ২,৭৩০ টি।
- ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সের জন্য মোট ৫৯ টি সরকারি কলেজে আসন রয়েছে ১৭৭৫ টি