আবুল খায়ের গ্রুপ নিয়োগ, বেতন, বোনাস, পদন্নতি ও অন্যান্য তথ্য।

আবুল খায়ের গ্রুপ লোগো

আবুল খায়ের গ্রুপ আমাদের দেশের বৃহত্তম গ্রুপগুলোর একটি, এটি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় বাজারেই সফলতার সাথে এগিয়ে চলছে। গ্রুপটির সিমেন্ট, স্টিল, সিরামিক, তামাক এবং ভোক্তা পণ্যের বাজারে শীর্ষস্থানীয় অবস্থানে রয়েছে। আবুল খায়ের গ্রুপ ১৯৫৩ সালে একটি একক পণ্য কোম্পানি হিসাবে যাত্রা শুরু করে। আজ গ্রুপটি সুপ্রতিষ্ঠিত এবং নেতৃস্থানীয় বেসরকারি খাতের কোম্পানি যার কার্যক্রম বিভিন্ন বিভাগ এবং ব্যবসায় বিস্তৃত।

আবুল খায়ের গ্রুপ এর ইতিহাস

★প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৫৩ সাল
★আবুল খায়ের গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান : আবুল খায়ের
বাংলাদেশে বর্তমানে আমদানি ও রাজস্ব দেওয়ার শীর্ষে রয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপ। ১৯৫৩ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় বিড়ি ব্যবসা দিয়ে যাত্রা হয় গ্রুপটির। তখন তার নাম ছিল আবুল বিড়ি কোম্পানি। ১৯৭৮ সালে এর প্রতিষ্ঠাতা আবুল খায়ের মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিড়ি ও ট্রেডিংই ছিল এটির মূল ব্যবসা। আবুল খায়েরের উত্তরসূরিরা পরে গড়ে তুলে স্টিল মিল, সিমেন্ট কারখানা, চা বাগান, ডেইরি প্রডাক্টসহ অনেক প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৩ সালে "স্টারশিপ কনডেন্সড মিল্ক", ১৯৯৬ সালে "স্টারশিপ ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার", ১৯৯৭ সালে "মার্কস ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার" ২০০৪ সালে "সিলন চা", ১৯৯৩ সালে "আবুল খায়ের গরু মার্কা ঢেউটিন" যুক্ত করে আবুল খায়ের গ্রুপ। দেশের সিমেন্ট খাতের বেশির ভাগ চাহিদা পূরণে সক্ষম আবুল খায়েরের প্রতিষ্ঠান শাহ সিমেন্ট। আবুল খায়ের ঢেউটিন বর্তমানে ২০টির বেশি দেশে রফতানি হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠাতা: প্রয়াত মি. আবুল খায়ের এর জীবন

আবুল খায়ের গ্রুপের মালিকের বাড়ি ছিল নোয়াখালী জেলার নাটেশ্বরের গ্রামে। প্রয়াত মি. আবুল খায়ের পকেটে সামান্য কিছু টাকা নিয়ে ভাগ্যের সন্ধানে নোয়াখালী জেলার নাটেশ্বরের গ্রামের বাড়ি ছেড়েছিলেন ১৯৪৮ সালে। তিনি চট্টগ্রামে পাহাড়তলীতে এসে কয়েক বছর খুচরা ব্যাবসার কাজ করেন। তারপর নিজেই খুচরা পণ্যের একটি আউটলেট খোলেন। কয়েক বছর পর ১৯৫৩ সালে তিনি একটি কক্ষে কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে নিজের নামে ছোট আকারে তামাক ব্যবসা (আবুল বিড়ি) শুরু করেন। এরপর বেশ কিছু পুজি সংগ্রহ করে শুরু করেন কুটির তাঁতের ব্যাবসা। ১৯৬৪ সালে তিনি আমদানি ব্যাবসা শুরু করেন। স্বাধীনতার পর তিনি ধীরে ধীরে স্টিল প্লেট, সিমেন্ট, নারকেল তেল, দুধ, সিগারেটের কাগজ ইত্যাদির একজন প্রধান আমদানিকারক হয়ে ওঠেন।

ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা হিসাবে তার ২৫ বছর চলাকালীন, তিনি ১৯৭৮ সালে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে অকাল মৃত্যুবরণ করার আগে বহুবিধ ব্যবসায় উদ্যোগী হন। পরবর্তীতে তার উত্তরাধিকারগণ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আজকের এই বিশাল আবুল খায়ের গ্রুপের রুপ দাড় করান।

বর্তমান চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ:

আবুল খায়ের গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম। আবু সৈয়দ চৌধুরী উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শাহ শফিকুল ইসলাম গ্রুপের পরিচালক। চারজনই আবুল খায়েরের ছেলে।

আবুল খায়ের গ্রুপ অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান:

Abul khair Group Subsidiaries:
  1. আবুল খায়ের লিমিটেড
  2. আবুল খায়ের মিল্ক প্রোডাক্টস লিমিটেড
  3. আবুল খায়ের কনজিউমার প্রোডাক্টস লি.
  4. আবুল খায়ের কনডেন্স মিল্ক এবং বেভারেজ লি.
  5. আবুল খায়ের ভেজিটেবল অয়েল ইন্ড্রাস্ট্রিস লি.
  6. আবুল খায়ের স্ট্রিপ প্রসেসিং লি.
  7. আবুল খায়ের স্টিল প্রোডাক্টস লি.
  8. শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লি.

আবুল খায়ের গ্রুপের পণ্য তালিকা

আবুল খায়ের গ্রুপের মোট ২২ টি পণ্য রয়েছে, নিচে তার তালিকা দেয়া হলো:

পণ্য তালিকা পণ্য তালিকা
১. শাদ কুরমুরে,১২. রেডিমিক্স কনক্রিট শাহ সিমেন্ট
২. কিডস ক্যান্ডি,১৩. স্টার শিপ মিল্ক,
৩. রেডিমিক্স১৪. গ্রুপআপ 2+(দুধের পাউডার),
৪. সিলন চা,১৫. AMA ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার,
৫. কফি বাইট,১৬. মার্কস ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার,
৬. AKS স্টিল১৭. গরু মার্কা রঙিন টিন,
৭. শাহ সিমেন্ট,১৮. গরু মার্কা ডাবল কোটেড ঢেউ টিন,
৮. আশা সিমেন্ট১৯. স্টেলা লাক্সারি স্যানিটারি ওয়্যার,
৯. ফাহিম মার্বেল,২০. ফ্রেইম বক্স (দিয়াশলাই),
১০. র‌্যালি (Rally),২১. সিরিয়াল (CEREAL),
১১. প্রোফম (Profom),২২. মারিস (Marise)

আবুল খায়ের টোবাকো পণ্য তালিকা:

১৯৫৩ সালে সর্বপ্রথম হাতে তৈরি ৪২ নং আবুল বিড়ি তৈরির মধ্য দিয়ে টোবাকো পণ্যের ব্যাবসা শুরু করে আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড। আবুল খায়ের টোবাকো হেড অফিস গুলশান-২, ঢাকা-১২১২। আবুল খায়ের টোবাকো পণ্যের মধ্যে রয়েছে ৫ টি সিগারেট এবং ২ টি বিড়ি ব্রান্ড, নিচে টোবাকো পণ্য তালিকা উল্লেখ করা হলো:

আবুল খায়ের গ্রুপের সিগারেট:
১. রেলি ভার্ভ (Rally verve),
২. ম্যারিস স্পেশাল ব্লেন্ড (MARISE Special Blend),
৩. ম্যারিস হোয়াইট (MARISE White),
৪. সুপার কিংস হোয়াইট (Super Kings White),
৫. সান মুন (Sun Moon)
আবুল খায়ের গ্রুপের বিড়ি:
১. স্পেশাল আবুল বিড়ি,
২. ৪২ নং আবুল বিড়ি।

আবুল খায়ের গ্রুপের সিগারেটের তালিকা উপরে দেয়া হয়েছে, আবুল খায়ের গ্রুপের নেভি এবং শেখ ব্রান্ডের সিগারেট ২০১৮ সালে জাপানের টোব্যাকো কম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়, বর্তমানে আবুল খায়ের গ্রুপের ৫টি সিগারেট এবং ২টি বিড়ির ব্রান্ড রয়েছে।

আবুল খায়ের গ্রুপ স্যালারী

পদভেদে প্রাথমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আবুল খায়ের গ্রুপ স্যালারী ৮ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।  আবুল খায়ের গ্রুপ স্যালারী এর তালিকা নিচে দেয়া হলো:

ক্র. পদবি এবং বেতন শিক্ষাগত যোগ্যতা
১.এ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল)
বেতন: ২৫,০০০ -৩৫,০০০ টাকা
বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়িরিং
২.সাব-এ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল)
বেতন: ১৮,০০০ - ২৫,০০০ টাকা
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়িরিং
৩.ফোরম্যান/ এ্যাসিস্টেন্ট ফোরম্যান
বেতন: ১২,০০০ -১৮,০০০ টাকা
এস.এস.সি ভোকেশনাল/ ট্রেড কোর্স পাশ
৪.টেকনিশিয়ান/ এ্যাসিস্টেন্ট টেকনিশিয়ান
বেতন: ১২,০০০ -১৮,০০০ টাকা
এস.এস.সি + ট্রেড কোর্স পাশ
৫.টেরিটরি সেলস অফিসার (TSO)
বেতন: ৪০০০০ হাজার
মাস্টার্স
৬.অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্কেটিং অফিসার (AMO)
বেতন: ২২,০০০ -২৬,০০০ টাকা
স্নাতক
৭.ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনি অফিসার
বেতন: ২২,০০০ -২৬,০০০ টাকা
মাস্টার্স
৮.ট্রেড মার্কেটিং সুপারভাইজার
বেতন: ২২,০০০ -২৬,০০০ টাকা
স্নাতক
৯.ট্রেড মার্কেটিং রিপ্রেজেন্টিভ (TMR)
বেতন: ১৩,০০০ টাকা, + প্রতিদিন TA-DA ১০০ টাকা করে।(ঢাকার বাইরে)
এইচ.এস.সি
১০.ব্রান্ড প্রমোটর (বিপি)
বেতন: ৮০০০/- থেকে ১২,০০০ মাসিক বেতন এবং কেপি আই এর মাধ্যমে অতিরিক্ত ২৫০০ - ৫০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।
এস.এস.সি

অন্যান্য যোগ্যতা: চটপটে, উপস্থাপনায় দক্ষতা সম্পন্ন, সর্বোপরি প্রার্থীর Convincing Ability থাকতে হবে। Official Mobile Apps ব্যাবহারের উপযোগী Android Mobile Phone থাকতে হবে।

বি:দ্র: উপরের লিস্ট কোনো পদ বা অন্যকোনো হিসাবে সিরিয়াল করা হয়নি। উপরের পদগুলো ছাড়াও আরো অনেক পদে নিয়োগ হয়ে থাকে। আপনি যদি অন্য কোনো পদের নিয়োগের বিষয়ে জানতে চান তাহলে নিচে কমেন্ট করলে আমরা খোজ নিয়ে জানিয়ে দিতে পারবো।

পদসমূহের বেতন ও যোগ্যতা সম্পর্কিত তথ্য ২০২২ সালে আবুল খায়ের গ্রুপ কর্তৃক সময়ে সময়ে প্রকাশিত সার্কুলারগুলো থেকে নেয়া।

বেতন বৃদ্ধি: (বাৎসরিক) পদ, বিভাগ, কাজ প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে।

★সর্বোনিম্ন ৫০০ টাকা
★সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা

ছুটি:
★সাধারণ ছুটি নেয়া যাবে বৈধ/জরুরী প্রয়োজনে,
★ঈদ ছুটি: ৫+৭=১২ দিন( পদ বা দায়িত্বভেদে ছুটির পরিমাণ বেশি হবে)
★সাপ্তাহিক ছুটি: শুক্রবার
★অন্যান্য সকল সরকারী ছুটির দিনগুলিতে ছুটি থাকবে। (ঐচ্ছিক ছুটি বাদে)

যোগদানের শর্ত:
★ ডিউটি টাইম: ৯ ঘন্টা ( ৮ঘন্টা ডিউটি +১ ঘন্টা লান্স ব্রেক)
★ কম্পানির প্রয়োজনে ওভার টাইম করা লাগে।
★ ফাকা চেক বা মূল সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে (সিকিউরিটি)

এডমিন রিভিও: ★★★★★
আবুল খায়ের গ্রুপে চাকুরিজীবিদের খুবই ভাল সম্মান দেয়া হয়। বেতন কাঠামো বেশ উন্নত ও নিয়ম অনুযায়ি বৃদ্ধিপায় এবং অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ভাল মান পাওয়া য়ায়। নিশ্চিন্তায় আবুল খায়ের গ্রুপে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

Related Post (Abul Khair Group)

আবুল খায়ের গ্রুপ এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২

Next Post Previous Post