কাইক্কা মাছ (kaikka fish) সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন...

 

কাইক্কা মাছ পরিচিতি

কাইক্কা মাছ অনেক অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় মাছ।তাই একেক অঞ্চলে একেক নামেই পরিচিত। তবে কাইক্কা মাছটি গাঙতুরি, কাখুয়া, কাকিয়া, কাকলে, কাকিলা ইত্যাদি নামেই বেশি পরিচিত। এই মাছটি দেখতে দেহ সরু, ধারালো দাঁতযুক্ত, ঠোঁট লম্বাটে এবং সামান্য চাপা তথা প্রায় সিলিন্ডার আকৃতির। আর খেতে অনেক সুদ্বাসু মাছ।

প্রাপ্তিস্থান

কাইক্কা মাছটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বেশি পাওয়া যায়। তবে মাছের রং ও আকৃতিতে কিছু পার্থক্য দেখা যায়।

বাসস্থান

কাকিলা বা কাইক্কা মিঠা পানির মাছ। সাধারণত নদীনালা, খাল, বিল, প্লাবনভূমি, হাওড় -বাঁওড়ে কাইক্কা মাছ পাওয়া যায়।এছাড়াও শিলা-পাথর ও বালুর উপস্থিতি আছে এমন জলাশয় বা নদীতে এদের দেখা মেলে।তবে কাইক্কা মাছ পুকুরে চাষ করা যায় না।

প্রজনন

কাইক্কা মাছ সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমান জলাশয়ে প্রজনন করে থাকে। বিশেষ করে নদীতে বর্ষার সময় প্লাবিত হয় এমন অঞ্চলে প্রজনন হয়ে থাকে।পরিণত মাছেরা ভাসমান জলজ উদ্ভিদ নেই এমন স্থানে বাস করলেও স্ত্রীর মাছেরা জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচে ডিম ছাড়ে।আর ডিম ছাড়ার ৯০ - ১০০ ঘণ্টার মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়ে আসে।তবে বিভিন্ন পরিক্ষায় দেখা যায় জুলাই ও অগাস্ট মাসে কাইক্কা মাছের সর্বাধিক প্রজনন হয়ে থাকে। 

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এই মাছের কৃত্রিম প্রজজন বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে চাষ শুরু হয়নি।

চাহিদা ও বাজারজাতকরণ

সর্বস্তরের মানুষের কাছে কাইক্কা মাছের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু গ্রাম অঞ্চলের মানুষের কাছে চাহিদা বেশি রয়েছে। আর কাইক্কা মাছ এক বছর বয়সে ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। তখন এই মাছ বাজারজাত করা হয়ে থাকে। কাইক্কা মাছের প্রতি কেজির দাম ৬০ - ৮০ টাকায় বিক্রি করা হয়ে থাকে।

কাইক্কা মাছের পুষ্টিগুণ

কাইক্কা মাছে প্রোটিন ১৭.১ শতাংশ, ফসফরাস ২.১৪ শতাংশ, লিপিড ২.২৩ শতাংশ ও ক্যালিসিয়াম ০.৯৪ শতাংশ রয়েছে, যা অন্যান্য ছোট মাছের তুলনায় অনেক বেশি।

কাইক্কা মাছ খাওয়ার উপকারীতা

কাইক্কা মাছ খাওয়ার অনেক উপকার রয়েছে। যথা:-

  • কাইক্কা মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে, যা মানব দেহের পেশি গঠনে কাজ করে। এছাড়াও চুল, চোখ, ত্বক, হরমোন ও কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • এই মাছে থাকা ফসফরাস যকৃত ও কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • এই মাছ নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরল মাত্র নিয়ন্ত্রণ থাকে।
  • হাড়ের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিতে সাহয্য করে।
  • দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই মাছে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড।

কাইক্কা মাছের ক্ষতিকর দিক

কাইক্কা মাছের তেমন কোনো ক্ষতিকর দিক এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। বরং এই মাছে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে এই মাছ খাওয়া যদি কারো এলার্জির প্রদুর্ভাব দেখা দেয় তাহলে পরিহার করা উচিত।
যদিও এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url