ব্রি ধান ২৯ এর বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি
১৯৯৪ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদের জন্য অনুমোদিত ব্রি ধান ২৯ বোরো মৌসুমের একটি নাবী জাতের ধান। ব্রি ধান ২৯ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত এবং বোরো মৌসুমে সব চাইতে জনপ্রিয় একটি জাত। এই জাতটির জীবন কাল ১৬০ দিন হয়ে থাকে। ব্রি ধান ২৯ এর গড় ফলন ৭.৫ টন হেক্টর প্রতি (এর ফলনের পরিমাণ সর্বোচ্চ)। তবে এর সার গ্রহণ ক্ষমতাও বেশী হয়ে থাকে, উচ্চ ফলন দেবার জন্য।
ব্রি ধান ২৯ এর বৈশিষ্ট্য:
- ব্রি ধান ২৯ উচ্চ ফলন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জাত।
- মানে ও গুণে ব্রি ধান ২৯ আধুনিক সকল ধান এর সেরা।
- ব্রি ধান ২৯ এর গাছের গড় উচ্চতা ৯৫ সে.মি.।
- গাছের কান্ড অনেক মজবুত হয় যে কারণে হেলে পডার ভয় থাকে না ।
- ব্রি ধান ২৯ এর চাল সাদা এবং মাঝারি চিকন আকারের হয়।
- খোল ও পাতা পোড়া রোগ মধ্যম প্রতিরোধশীল।
ব্রি ধান ২৯ চাষ পদ্ধতি:
- বীজ তলায় বীজ বপণ: ১৭ই কার্তিক থেকে ১৬ই অগ্রহায়ণ (১ই নভেম্বর থেকে ৩০ই নভেম্বর) পর্যন্ত বীজ তলায় বীজ বপণ করার উপযুক্ত সময়।
- চারার বয়স: ৪০ থেকে ৫০ দিন বয়সী চারা রোপন করতো হবে।
- রোপন দূরত্ব: ২০ × ১৫ সে.মি.।
- সার প্রয়োগ বিঘা প্রতি:
- ইউরিয়া- ৩০ থেকে ৪০ কেজি, টিএসপি- ৭ থেকে ১৪ কেজি, এমপি- ৮ থেকে ১৬ কেজি, জিপসাম- 8 থেকে ৮ কেজি ও জিঙ্ক- ০.৭ থেকে ১.৪ কেজি বিঘা প্রতি।
- জমি প্রস্তুতের সর্বশেষ চাষের সময় অর্ধেক এমপি, সবটুকু টিএসপি, জিপসাম এবং জিংক সালফেট জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
- ইউরিয়া তিন কিস্তিতে ভাগ করে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
- প্রথম বার চারা রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিন পরে, ২য় বার চারা রোপণের ৩০ দিন পরে এবং ৩য় বার চারা রোপণের ৪৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।
- ইউরিয়া সার প্রয়োগ করার জন্য এল.সি.সি (লিফ কালার চার্ট) ব্যবহার করতে হবে।
- বাকী অর্ধেক এমপি সার ইউরিয়ার শেষ কিস্তির সাথে প্রয়োগ করতে হবে।
- আগাছা দমন: চারা রোপণের পর থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
- সেচ ব্যবহার: ধান গাছের থোর আশা থেকে দুধ হওয়া অবধি জমিতে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা বা রস রাখতে হবে (এডাব্লিউডি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারলে ভাল হয়)।
- রোগবালাই বা পোকামাকড় দমন: রোগবালাই বা পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে সাথে সাথে অনুমোদিত বালাইনাশক অনুমোদিত মাত্রায় জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
- ফসল কাটা: ২৫ই বৈশাখ থেকে ০৬ই জ্যৈষ্ঠ ফসল কাটার উপযুক্ত সময়।