তারেক জিয়ার শশুর বাড়ি কোথায়?

তারেক জিয়ার জন্ম ২০ নভেম্বর ১৯৬৫ সালে ঢাকায়। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার পিতা জিয়াউর রহমান (বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন) এবং মাতা বেগম খালেদা জিয়া (বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী)। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাস করেন তারেক জিয়া। এরপর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কলেজ এবং সেন্ট জোসেফ কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে আইন বিভাগে এবং পরে লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন তবে স্নাতক শেষ করতে পারেননি। পরে তিনি ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে নৌ-যোগাযোগ ও বস্ত্রশিল্প খাতে বিনিয়োগ করেন।

তবে এই পোস্টে তারেক জিয়া নয় বরং তার শশুরের বর্ণাড্য জীবনের নানান তথ্য তুলে ধরা হবে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান
রিয়ার অ্যাডমিরাল
মাহবুব আলী খান

তারেক জিয়ার শশুর বাড়ি কোথায়?

তারেক জিয়ার শশুর বাড়ি সিলেট জেলার বিরাহীমপুরে। শশুরের নাম: রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান।

  • ১৯৫২ সালে ক্যাডেট হিসেবে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের নৌবাহিনীর নির্বাহী শাখায় যোগ দেন।
  • ১৯৬০ সালে তুগ্রিলের গানারি অফিসার ছিলেন [পি. এন. এস (পাকিস্তানি নেভাল শীপ্)]
  • ১৯৬৩ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক পুরস্কৃত হন। [চৌকস অফিসার হিসেবে]
  • ১৯৬৪ সালে এন্টি সাবমেরিন ও পি. এন. এস টিপু সুলতানের টর্পেডোর অফিসার ছিলেন।
  • ১৯৭৯ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত (১৯৮৪) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন।
তারেক জিয়ার শশুর রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান (সাবেক নৌবাহিনী প্রধান ও সাবেক মন্ত্রী) ৩ নভেম্বর ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিরহীমপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আহমেদ আলী খান প্রথম মুসলিম ব্যারিস্টার (১৯০১ সালে ব্যারিস্টার হন)। তিনি ভারত আইনসভার সদস্য (এমএলএ) এবং আসাম কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। তার মাতা জুবাইদা খাতুন। এক বোনে ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মাহবুব আলী খান ছিলেন সবার ছোট। ভারতবর্ষ বিভাগের পর মাহবুব আলী খানের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকার ৬৭ পুরানপল্টন লাইনের বাড়িতে। পড়াশোনায় মাহবুব আলী খান ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। তিনি ঢাকা ও কলকাতায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করেন এবং ঢাকা কলেজ থেকে কলেজ জীবনের শিক্ষা গ্রহন করেন।

মাহবুব আলী খান ১৯৫২ সালে পাকিস্তান নৌবাহিনীর নির্বাহী শাখায় ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটার কম্বাইন্ড ফোর্সেস স্কুল থেকে সম্মিলিত ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যের ডার্টমাউথের রয়্যাল নেভাল কলেজ থেকে স্নাতক লাভ করেন এবং ১৯৫৪ সালে ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর রণতরী ট্রায়ামপতে প্রশিক্ষণ নেন। স্নাতক শেষ করার পর ১৯৫৫ সালে সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে বিয়ে করেন। তাদের শাহিনা খান (বিন্দু) ও জুবাইদা খান (বিনু) নামে দুই কন্যা হয়।
১ মে ১৯৫৬ সালের স্থায়ী কমিশন পদ লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে রানী ২য় এলিজাবেথ কর্তৃক পুরস্কৃত হন কৃতী অফিসার হিসেবে।

মাহবুব আলী খান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত ছিলেন। তিনি তার দুই কন্যা ও স্ত্রীসহ পশ্চিম পাকিস্তানে বাস করছিলেন। যুদ্ধের সময় তার দেশপ্রেম বুঝতে পেরে পাকিস্তান বাহিনী পরিবারসহ তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন। দীর্ঘ ২ বছর বন্দীজীবন কাটানোর পর ১৯৭৩ সালে আফগানিস্তান ও ভারত হয়ে তার দুই কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url