পানাম নগর কেন বিখ্যাত? কোথায় অবস্থিত? কবে বন্ধ থাকে?

পানাম নগর

পানাম নগর কেন বিখ্যাত?

পানাম নগরের ভবনগুলির স্থাপত্যশৈলী ও পানাম নগরের ইতিহাস প্রধাণত পানাম নগরিকে প্রসিদ্ধ করে তুলেছে। শতাব্দীর পরম্পরায় ঘেরা শহরটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে বহু পর্যটকরা ছুটে আসেন। যদিও এই পরিত্যক্ত শহরের বেশিরভাগ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে, তবুও ৫২টি ভবন এখনও টিকে আছে। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই ভবনগুলির বেশিরভাগই একতলা ও দোতলা বিশিষ্ট, তবে বেশ কয়েকটি তিনতলা ভবনও রয়েছে। ভবনগুলিতে গ্রীক, মুঘল ও ইউরোপীয় স্থাপত্যের অসাধারণ কারুকার্যের নিদর্শন ফুটে উঠেছে। এসব আবাসিক ভবনের পাশাপাশি জাদুঘর, মাজার, মসজিদ, মন্দির, মঠ, পান্থশালা, টাকশাল, চিত্রশালা ইত্যাদির কারণে পানাম নগর বিখ্যাত।

পানাম নগরীর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পঙ্খীরাজ নামে একটি খাল। শহর ও নদীর মধ্যে সহজ যোগাযোগের জন্য এই খালটি খনন করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ছুঁয়ে নগরের পূর্বদিকে মেনিখালী নদী হয়ে মেঘনা নদীতে পড়েছে এই খাল।

পানাম নগরে মুসলিম আধিপত্যের বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল, অনুমানিক ১২৮১ সালে থেকে। নগরীর বেশির ভাগ বাসিন্দা হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও কিছু দিনের মধ্যে মসলিন শাড়ির বিশাল আড়ং গড়ে ওঠে। ইস্ট কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলস্বরূপ, সেই সময়ে পানামায় নতুন ঔপনিবেশিক স্থাপত্যে ইউরোপীয়দের সহযোগিতার বিকাশ ঘটে। বাংলার বিখ্যাত চারু ও কারুশিল্পের খ্যাতি উপমহাদেশ ছাড়িয়ে পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়ে। আর পানামা নগরীতেই বিকশিত হয়েছিল তার আতুর ঘর। জেমস টেলরের মতে, এই পানাম নগরীতেই মসলিন শিল্প এবং তাঁত ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য একটি বিখ্যাত বাজার ছিল। তাছারা এটি বাংলা অঞ্চলের তাঁতিদের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু এবং বাসস্থান ছিল। পানাম নগরে প্রধাণত ব্যবসায়ী ও জমিদারদের বসবাস ছিল। এখান থেকে ব্যবসায়িরা দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁতের ব্যবসা চালাতেন। এই নগরীকে বাংলার মসলিন ও অন্যান্য বস্ত্রশিল্পের প্রচার ও বাণিজ্যের তীর্থস্থান বলা হত। পরবর্তীতে এই পোশাক ব্যবসার দখল নেয় নীল বাণিজ্য। ব্রিটিশরা এখানে নীলের একটি বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে।

পানাম নগর কোথায় অবস্থিত

বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় পানাম নগর অবস্থিত। সোনারগাঁওয়ের ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে এই সোনারগাঁও পানাম নগর। সুলতানি আমলে 'পানাম' ছিল সোনারগাঁয়ের রাজধানী। মহাস্থানগড় ও ময়নামতি যথাক্রমে বগুড়া ও কুমিল্লা জেলার পুরাকীর্তি।

পানাম নগর কবে বন্ধ থাকে?

পানাম নগর সময়সূচি নিচে দেয়া হয়েছে।
  • সোমবার: অর্ধদিবস খোলা (দুপুর ১:৩০ টা থেকে বিকাল ৫:০০ টা পর্যন্ত)
  • মঙ্গলবার ধেকে শনিবার: সকাল ৮:০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭:০০ টা পর্যন্ত।
  • রবিবার: সাপ্তাহিক বন্ধ

পানাম নগর সপ্তাহের ৬ দিন খোলা থাকে এবং একদিন বন্ধ থাকে (রবিবার)। এছাড়াও বিশেষ কোনো উৎসব এবং সরকারী ছুটির দিনেও খোলা থাকে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url