কাতিলা গামের উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম (a to z পড়ুন)
চিত্র: কাতিলা গাম |
কাতিলা গাম:
কাতিলা গাম দেখতে সাদা বা হালকা লালচে বর্ণের, যা দেখতে অনেকটাই তাল মিশ্রির মত। কাতিলা গম উদ্ভিদের শিকড়ের রস শুকিয়ে সংগ্রহ করা হয়, এটি স্বাদহীন, গন্ধহীন ও পলিস্যাকারাইডের পানির দ্রবণীয় মিশ্রন এনং পানিতে ভিজিয়ে রাখলে নরম হয়ে ফুলে উঠে। কাতিলা গাম হ্যান্ড লোশন, টুথপেস্ট এবং দাঁতের চিকিৎসায় ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। নামি-দামি অনেক রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন আইটেমের জেলি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও সালাদ ড্রেসিং, খাবার ও পানীয় প্রস্তুত করতে কাতিলা গাম ব্যবহার করা হয়।
কাতিলা গাম এর উপকারিতা:
- নিয়মিত দুই বার কাতিলা গাম পানিতে ভিজিয়ে তাতে একটু মধু, লেবু, লাল চিনি বা তালমিছরি মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে আপনার সারাদিনের ক্লান্তি কেটে যাবে এবং শরীর শীতল থাকবে।
- বিশেষ করে, যারা গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম সহ্য করতে পারেন না বা হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্য কাতিলা গাম অত্যন্ত উপকারি।
- হজম এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য কাতিলা গাম খুবি উপকারী। কাতিলা গামের একটি রেচক প্রভাব রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায্য করে এবং এতে উপস্থিত এনজাইমগুলি খাদ্য হজম এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে।
- এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে ও মেটাবলিজম উন্নত করে।
- কাতিলা গমের ফাইবার আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে এবং আপনার অন্ত্রকে সুস্থ রাখে, যা আপনার শরীরের জন্য ভাল।
- কাতিলায় রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য, যা ত্বক থেকে ব্রণ ও বলিরেখা দূর করতে খুবই উপকারী। ব্রণ নিরাময়ে এবং দাগ কমাতে সাহায্য করে, ত্বকের পিগমেন্টেশন, ব্রণ, ব্রেকআউট এবং পোড়া থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করে।
- চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও কাতিলা উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে যা চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
- পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাতিলা গাম অনেক ভালো কাজ করে এবং এর ফলাফল অনেক দ্রুত পাওয়া যায়।
কাতিলা গাম কি কাজ করে?
উত্তর: কাতিলা গাম শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে, হাত-পায়ের জ্বালাপোড়া দূর করতে, গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি অটুট রাখতে, চকচকে ত্বক পেতে, ওজন কমাতে, যৌন ক্ষমতা বাড়াতে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।
কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম
কাতিলা খাওয়ার অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
কাতিলা গাম এর অপকারিতা নেই, অর্থাৎ এই গাম সেবনে উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো অপকারিতা দেখা যায়নি, গবেষণাতেও পাওয়া যায়নি। তবে সঠিক নিয়মে পরিমাণমতো সেবন না করলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে ভুল নিয়মে কাতিলা খাওয়ার অপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে:
- কাতিলা গাম আঠা বা জেল জাতীয় পদার্থ। কাতিলা কোন ঔষধের সাথে সেবন করলে তা পেটে ও অন্ত্রে ওষুধের সাথে লেগে থাকতে পারে।
- মুখের মাধ্যমে যে সকল ওষুধ সেবন করেন তার সাথে একই সময়ে কাতিলা সেবন করলে শরীর ওষুধ শোষণ হ্রাস করতে পারে এবং ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। যেকারণে, মুখে খাওয়ার ওষুধের অন্তত এক ঘন্টা পরে কাতিলা গাম খাবেন।
- কাতিলা গাম প্রচুর পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন, যদি পর্যাপ্ত পানি পান না করেন এটি আপনার অন্ত্রকে ব্লক করতে পারে।
- কাতিলা গাম আঠা জাতীয় পদার্থ, পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফুলে ওঠে। একারণে পর্যাপ্ত সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখা প্রয়োজন। যদি অল্প সময় পানিতে ভিজিয়ে খেয়ে ফেলেন, তবে পেটে গিয়ে ফুলে উঠবে এবং অন্য খাদ্যকণাকে আটকে ধরবে সহজেই।
- কাতিলা খালি পেটে খেতে পরামর্শ দেয়া হয়, এক্ষেত্রে ভুল বশত পানিতে ভালভাবে না মিশিয়ে খেলে হজম সমস্যা থেকে শুরু করে নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কাতিলা গাম এর দাম:
কাতিলা গামের দাম সুনিদিষ্ট নয়, বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়ে থাকে। সাধারণত গড়ে প্রতি কেজি কাতিলা গামের দাম ৯০০ - ১০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর
কাতিলা গাম কোথায় পাওয়া যায়?
আপনার স্থানীয় বাজারে পাওয়া যাবে।