ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল ঢাকা - Intercontinental Hotel Dhaka

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল ঢাকা - intercontinental hotel dhaka:

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (intercontinental hotel dhaka) হল ঢাকার একটি বিলাসবহুল হোটেল, যা ঢাকার রমনায় অবস্থিত। এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম ফাইভ-ষ্টার হোটেল। হোটেলটি ১৯৬৬ সালে ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ঢাকা নামে খোলা হয়েছিল। উইলিয়াম বি.ট্যাবলার এর স্থপতি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনার সাক্ষী এই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলটি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর এখানে অনেক রাজনৈতিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক রেড ক্রস এই ইন্টারকন্টিনেন্টাল -কে নিরপেক্ষ স্থান হিসাবে ঘোষণা করেন।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলটির আশেপাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ চত্বর, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ক্লাব, বারডেম হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর অবস্থিত।

এটি ১৯৮৩ সালের আগ পর্যন্ত ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত হতো, যখন এটি "শেরাটন হোটেল" নিয়ে নেয় তখন "হোটেল শেরাটন ঢাকা" নামে নামকরণ করা হয়। ২০১১ সালে, শেরাটন ঘোষণা করে যে তারা তাদের কার্যক্রম শেষ করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে ব্যবস্থাপনা হস্তান্তর করবে, তারপরে এটি "রূপসী বাংলা হোটেল" নাম দেয়া হয়। ২০১৩ সালে, ঘোষণা করা হয়েছিল যে ICHG আবার ফিরে আসবে এবং বড় ধরনের সংস্কার ও নতুনত্ব তৈরি হয়। যেটি ২০১৬ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা (intercontinental dhaka) নামে চালু হওয়ার কথা ছিল। যাইহোক, এটি সংস্কারের পর ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণে সজ্জিত হোটেলটি সেদিন সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হোটেলটির সংস্কার কাজে ব্যয় হয়েছে ৬২০ কোটি টাকা।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বর্তমান অবকাঠামোতে ২২৬টি কক্ষ রয়েছে; এর মধ্যে ৪০ বর্গ মিটারের ২০১টি ডিলাক্স, এক্সিকিউটিভ ও প্রিমিয়াম রুম, ৬০ বর্গ মিটারের ৫টি সুপিরিয়র স্যুইট, একই আকারের ১০টি ডিলাক্স স্যুইট, ৭৫ বর্গ মিটারের ৫টি ডিপ্লোমেটিক স্যুইট, এবং ১৫০ বর্গ মিটারের ৫টি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট। ইন্টারকন্টিনেন্টালে ২১,০০০ বর্গফুটের দুটি বলরুম এবং ৭টি মিটিং রুম রয়েছে। মূল বলরুমকে বলা হয় রূপসী বাংলা।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল ঢাকা এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস - History of Intercontinental Hotel Dhaka

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই হোটেলে ক্র্যাক প্লাটুন সফল অভিযান পরিচালনা করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচারে দেশ যখন ধ্বংস ও মৃত্যুর মুখে তখন বৈদেশিক সাহায্যের জন্য বহির্বিশ্বকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানোর জন্য পাকিস্তানিরা বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের ঢাকায় আমন্ত্রণ জানায়। ৯ জুন ১৯৭১ সালে তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ওঠার কথা ছিল। বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের বহনকারী গাড়িটি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হোটেলের গেটে পৌঁছালে ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্যরা হোটেলে গ্রেনেড চার্জ করে। গ্রেনেড বিস্ফোরণে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের বহনকারী গাড়ি এবং হোটেলের প্রবেশ পথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি ছিল ঢাকার প্রথম গেরিলা অপারেশন। এর মাধ্যমে বহির্বিশ্ব জানে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করেছেন। ফলে বিশ্বব্যাংকের সাহায্য কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের ১১ আগস্ট হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ২য় সফল গেরিলা অপারেশন পরিচালনা করেন।


Next Post


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url